শক্তিশালী `ফণী' মোকাবিলায় কক্সবাজারের ১০ হাজার কর্মী প্রস্তুত

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট কক্সবাজার বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত / ছবি: বার্তা২৪

কক্সবাজারে ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত / ছবি: বার্তা২৪

বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ মোকাবিলায় কক্সবাজারেরর উপকূলীয় এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে বিভিন্ন সংস্থার ১০ হাজারের বেশি কর্মী। পাশাপাশি প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৯ টি মেডিকেল টিম।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুর ১২ টার দিকে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৬ হাজার ৪৫০ জন কর্মী রয়েছে। তার মধ্যে রোহিঙ্গা শিবিরে ১ হাজার ৭০০ কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ৪৩০ ইউনিটে ভাগ হয়ে তারা কাজ করবে। রেটক্রিসেন্টের রয়েছে ১২ শতাধিক কর্মী। তারা ৫ টি ইউনিটে ভাগ হয়ে কাজ করবে।

এছাড়া সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে ৮৯ টি টিম ঘটন করা হয়েছে। তার মধ্যে ২০ জন চিকিৎসক অন্যান্য এলাকা থেকে এনে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পাটানো হয়েছে। তাছাড়াও ফায়ার সার্ভিসের চারটি বিশেষ ইউনিট ও বিদ্যুৎ বিভাগের ছয়টি ইউনিট প্রস্তুত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সভায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) আশরাফুল আবছার বলেন, জেলা শহরের পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে ব্যাপক প্রস্তুতির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আমরা বিষয়টিতে নজরদারি রেখেছি।

আবহাওয়ার সমুদ্রবন্দরের সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ফণী। এটি বৃহস্পতিবার (২ মে) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৬৫ কিলোমিটার, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৯২৫ কিলোমিটার অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে শুক্রবার (৩ মে) বিকেল নাগাদ ভারতের ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এদিন সন্ধ্যার দিকে খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/May/02/1556779836766.jpg

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ফলে মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ০৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ৭ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

এদিকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৬ নম্বর নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৬ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অপরদিকে কক্সবাজার সমূদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমের সময় চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ৯০-১১০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মংলা ও পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

আরও পড়ুন: শুক্রবার সারা দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা